পোস্টগুলি

Love Story..পাট-১০

 হামিদ সাহেব কপাল কুচকে বললেন, তার আবার কি খবর? তােমার মেয়ে ভালবাসা করে বিয়ে করেছে। ছেলেটার বাপের কি ব্যবসা ছিল। সে মারা যেতে ছেলে সেই ব্যবসা চালাচ্ছে। ব্যবসার জন্যে তার লাখ খানেক টাকা দরকার। সেই জন্যে তােমার মেয়ে এসেছে। সে এসে যে কথা বলেছে তা মিথ্যে। হামিদ সাহেব নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারলেন না। হতবাক হয়ে চিন্তা করতে লাগলেন, আমার মেয়ে হয়ে এরকম কাজ করবে তাও কি সম্ভব? আবার চিন্তা করলেন, সে যখন নিজের মুখে বলেছে, তখন তাে বিশ্বাস করতেই হয়। তারপর খুব রাগের সঙ্গে বললেন, এ বিয়ে আমি কখনাে মেনে নিতে পারব না। আমার মান ইজ্জৎ সব যাবে। ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবকে আমি কোন মুখে একথা জানাব? ডাক তাকে, তার। মুখে আমি শুনতে চাই। আফসানা বেগম মেয়েকে ডেকে নিয়ে এলেন। ঝর্ণা মায়ের সঙ্গে এসে জড়সড় হয়ে একপাশে দাঁড়িয়ে ভয়ে কাঁপতে লাগল। হামিদ সাহেব গম্ভীর স্বরে বললেন, তাের মাকে যা বলেছিস তা কি সত্যি? ঝর্ণা ভয়ে কথা বলতে পারল না। মাথা নিচু করে চুপ করে কাপতেই লাগল। কি হল কিছু বলছিস না কেন? ঝর্ণা কোনাে রকমে কাঁপা গলায় বলল, জি, সত্যি। হামিদ সাহেব হুংকার দিয়ে উঠলেন, স্বীকার করতে তাের লজ্জা করল না। বড় আ...

Love Story..pat..9

 আমিন আনন্দে আটখানা হয়ে বলল, সে ব্যাপারে তুমি যা বলবে তাই হবে। তা হলে আগামীকাল আমি বেরা দশটার দিকে আসব। গতকাল সামার ভ্যাকেসানের ছুটি পড়েছে। আগামীকাল ঝর্ণা দেশে যাওয়ার মনস্থ করেছিল। আমিনের কথা শুনে বলল, বেশ তাই এস। পরের দিন ঝর্ণা সুপারিন্টেন্টেকে দেশে যাওয়ার কথা বলে হল থেকে বেরিয়ে এল। আমি আগের থেকে গেটের বাইরে অপেক্ষা করছিল। তাকে সঙ্গে করে কোর্টে না গিয়ে কাজী অফিসে গেল। ঝর্ণা বলল, কোর্টে যাবে না? আমিন বলল, কোর্টে অনেক ঝামেলা। কোর্ট আর কাজী অফিসের মধ্যে পার্থক্য নেই। সেদিন কাজী অফিস থেকে কাবিন করে একদম বিয়ের কাজ সেরে আমিন ঝর্ণাকে নিয়ে বাসায় এল। আমিন আগেই মাকে বুঝিয়ে বলেছে, ঝর্ণাকে-বিয়ে করলে তার বাবার কাছ থেকে ব্যবসার ব্যাপারে অনেক সাহায্য পাওয়া যাবে। তাই শায়লা বেগম পুত্রবধুকে সাদরে গ্রহণ করে ঘরে তুললেন। আমিনের বাসায় এসে ঝর্ণার মন খারাপ হয়ে গেল। সে ভেবেছিল, আমিনের বাবা যখন ব্যবসায়ী তখন তাদের বাড়ি ও ঘরের আসবাবপত্র নিশ্চয় খুব উন্নত ধরণের হবে। কিন্তু দোতলা চারকামরা করে আটকামরা বাড়ি ও নিম্নমানের আসবাবপত্র দেখে তার মন খুঁৎ খুঁৎ করতে লাগল । কিন্তু বাইরে তা প্রকাশ করল না। ...

Love story..প্রেম কাহিনী-পাঠ-৮

 আমিন বুঝতে পেরেছে ছেলেটা রােগা হলে কি হবে, গায়ে অসুরের শক্তি। সম্মুখ। সমরে তার কিছু করতে পারবে না ভেবে শুধু বলল, আমি এর প্রতিশােধ নেই । তারপর ঝর্নাকে বলল, এস অনেক দেরি হয়ে গেল। তারা একটা রিকশায় উঠে চলে যাওয়ার পর নকীব নামে একটা ছেলে সাইফুলকে বলল, আচ্ছা একহাত দেখালেন ভাই। সত্যিই আপনার জওয়াব নেই। আপনার নামটা জানতে পারি? সাইফুল বলল, নাম জেনে আর কি হবে? তবু যখন জানতে চাইছেন তখন বলাই উচিত, কি বলেন? তারপর সেও একটা রিকশায় উঠে বলল, আমার নাম সাইফুল । নকীব নাম শুনে চমকে উঠে হাঁ করে সাইফুলের চলে যাওয়া রিক্সার দিকে চেয়ে রইল । তার অবস্থা দেখে অন্য একটা ছেলে তাকে জিজ্ঞেস করল, কি ব্যাপার? আপনি ওর নাম শুনে চমকে উঠে অমন করে চেয়ে রয়েছেন কেন? নকীব বলল, কুংফু মাস্টার সাইফুলের নাম আপনি শােনেন নি? যার নাম কুংফু জগতে বিখ্যাত। আমি ওনার নাম অনেক শুনেছি। কিন্তু চোখে কোনাে দিন দেখি নি। আজ দেখলাম। সত্যি ওনাকে দেখলে কিন্তু সে রকম বিখ্যাত লােক বলে বিশ্বাস হয় না। ছেলেটা বলল, আমিও ওনার নাম শুনেছি, কিন্তু দেখি নি। আর উনিই যে তিনি, তা আপনি বুঝলেন কি করে? নকীব বলল, দেখলেন না, প্রতিপক্ষের আক্রমণ কত সহজে ব্...

প্রেম কাহিনী-Love story-পাঠ-৭

 ঝর্ণা সাইফুলের নিরুদ্দেশের পর থেকে তার কোনাে খবর জানে না! তাই তাকে আজ এখানে দেখে চমকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়ল। সাইফুল বহুদিন তার মানস প্রতিমাকে এত কাছ থেকে দেখে নি । জিজ্ঞেস করল, কেমন আছ? ঝর্ণা তখন সাইফুলের দিকে তাকিয়ে ভাবছিল, সাইফুল তা হলে ভার্সিটিতে পড়ছে। আগের সেই রােগা পেঁচকা হাড়গীলে সাইফুল এখন বেশ সুঠাম দেহের অধিকারী। গায়েও দামী প্যান্ট শার্ট। তাকে ভালাে মন্দ খোজ নিতে দেখে তেলে বেগুনের মতাে জ্বলে উঠল। কড়া কিছু বলতে গিয়ে সামলে নিল। আমিনের সামনে কোনাে সিন ক্রিয়েট করতে চাইল না। সংযত হয়ে বলল, সে কথা জেনে তােমার লাভ নেই। তারপর আমিনকে বলল, চল, দেরি হয়ে যাচ্ছে। আমিন জিজ্ঞেস করল, ছেলেটা কে? ঝর্ণা বলল, আমাদের গ্রামের এক ভূমিহীন কৃষকের ছেলে। কারাে দয়ায় হয়তাে লেখাপড়া করছে। আমিন সাইফুলকে একা বিদ্রুপের হাসি উপহার দিয়ে ঝর্ণার একটা হাত দুলাতে দুলাতে চলে গেল। সাইফুল মৃদু হেসে লাইব্রেরীতে ঢুকল। এরপর থেকে সে আর ঝর্ণার কাছাকাছি যায় না, দূর থেকে দেখে। আমিন বড়লােক না হলেও মােটামুটি স্বচ্ছল পরিবারের ছেলে। তার বাবার ছােট খাট ব্যবসা। বিভিন্ন অফিসে মাল সাপ্লাই দেন। ব্যবসা থেকে যা ইনকাম করেন...

প্রেম কাহিনী-পাঠ-৬

  করতে করতে পড়াশােনা করতে পারলেও ভালাে রেজাল্ট করতে পারবে না। তারচেয়ে এক কাজ কর, ও আমাদের আরজু হয়ে আমাদের কাছে থেকে লেখাপড়া করুক। সাইফুল সাহেবের স্ত্রীর কথা শুনে অবাক হয়ে ওনাদের দিকে তাকিয়ে দেখল, দু’জনেরই চোখে পানি। জিজ্ঞেস করল, আরজু কে? জালাল সাহেব চোখ মুছে বললেন, আরজু আমাদের একমাত্র সন্তান ছিল। তাকে আল্লাহ উঠিয়ে নিয়েছেন। তারপর স্ত্রীকে দেখিয়ে বললেন, সেই থেকে অসুস্থ হয়ে গেছে। শুনে সাইফুলের মনে দুঃখ হল। সেই সঙ্গে ফকিরের কথা তার মনে পড়ল। আল্লাহকে স্মরণ করে সে উঠে এসে প্রথমে জালালসাহেবকে এবং পরে তাহেরা। বেগমকে কদমবুছি করে বলল আমাকে আপনারা আপনাদের ছেলে মনে করবেন। তাহেরা বেগম তার মাথায় চুমাে খেয়ে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে বললেন, হ্যা, তাই মনে করব বাবা। সে জন্যে বােধ হয় আল্লাহ তােমাকে আমাদের কাছে এনে দিয়েছেন। আমরা তােমাকে আরজু বলে ডাকব। সেই থেকে সাইফুল আরজু হয়ে তাদের কাছে থেকে লেখাপড়া করতে লাগল। সে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামায ও প্রতিদিন ভােরে কুরআন তেলাওয়াত করে। তাই দেখে জালাল সাহেব ও তাহেরা বেগম নামায পড়ছেন এবং কুরআন। তেলাওয়াত করেন। ওনারা সাইফুলকে পেয়ে নিজেদের ...

প্রেম কাহিনী-পাঠ-৫

 ফকিরের কথা শুনে সাইফুল হা করে তার দিকে চেয়ে রইল।  চেয়ে থাকতে থাকতে এক সময় তার মনে হল, ফকিরকে আর দেখতে পাচ্ছে না। দু'হাতে চোখ রগড়ে চারপাশে তাকিয়ে খুব অবাক হয়ে গেল। কোথাও ফকিরটা নেই। ভাবল, তা হলে কি সে এতক্ষণ স্বপ্ন দেখেছিল? আংটির কথা মনে পড়তে হাতটা তুলে দেখল, আংটিটা আঙ্গুলে রয়েছে। আল্লাহর নাম স্মরণ করে রিক্সায় উঠে গ্যারেজে ফিরে এল। সকালে মালিককে গত রাতে শুধু টাকা খােয়া যাওয়ার ঘটনাটা বলল । মালিক বললেন, ভালাে-মন্দ দেখে প্যাসেঞ্জার তুলতে হয়। সেই ঘটনার দিন পনের পর একদিন একটা প্যাসেঞ্জার নিয়ে মতিঝিল এল। প্যাসেঞ্জার নামিয়ে গ্রীনলেজ ব্যাংকের সামনে দিয়ে আসার সময় একজন ভদ্রলােক রিক্সায় উঠে পুরানা পল্টনে যেতে বললেন। ঠিকানা মতে পৌছে দিয়ে বেশ কিছু দূর ফিরে আসার পর রিক্সার পাদানিতে কিছু পড়ার শব্দ পেয়ে পিছন ফিরে দেখল, একটা মাঝারি সাইজের চামড়ার ব্যাগ রিক্সার পাদানিতে পড়ে রয়েছে। রিক্সা থেকে নেমে সাইফুল ব্যাগটা হাতে নিয়ে বুঝতে পারল, ব্যাগটা বেশ ভারি। চেন টেনে খুলে অবাক হয়ে গেল। ব্যাগটা পাঁচশাে টাকার নােটে ভর্তি । তাড়াতাড়ি বন্ধ করে এদিক-ওদিক তাকিয়ে সেটা গদীর নিচে রেখে...

প্রেম কাহিনী** পাঠ-৪

 জিজ্ঞেস করল, সাইফুলের কি হয়েছে? তুমি কিছু বলেছ? ওর সামনে পরীক্ষা। পড়াশােনা না করে ঘুরে বেড়াচ্ছে কেন? ওসমান একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে সব কথা বলল। শুনে মনিরার মন খারাপ হয়ে গেল। কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থেকে বলল, ও যা ছেলে, একবার যখন বলেছে এ বছর পরীক্ষা দেবে না তখন কি আর দেবে? আমার মনে হয় সে ঘরে না গিয়ে অন্য কোথাও চলে গেছে। তুমি ওর জন্য চিন্তা করাে না। আব্বা। ছােট না, খাট না, অতবড় ছেলে হয়ে যদি নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারে, তাতে তােমার কি করার আছে? এবেলা থেকে খেয়েদেয়ে ওবেলা যাবে । এমন সময় মনিরার মেয়ে নাজনীন স্কুল থেকে এসে নানাকে দেখতে পেয়ে ছুটে এসে বই খাতা রেখে কদমবুসি করে বলল, কেমন আছেন নানা? নানি ভালাে আছে? মামা কালকে এসেছিল, আজ সকালে নাস্তা খেয়ে চলে গেল। কত করে বললাম থাকতে, থাকল না। আপনাকে আজ থাকতে হবে কিন্তু। ওসমান নাতনীকে দু'হাতে ধরে কোলে বসিয়ে মাথায় চুমাে খেয়ে দোয়া করে বললেন, হ্যা ভাই আমরা সবাই ভাল আছি। তুমি এখন কোন ক্লাসে পড়? নাজনীন বলল, নানা ভাই, আপনি বডত ভুলে যান। সেবারে যখন এলেন তখন বলেছিলাম না, থ্রিতে পড়ি? ওসমান মনিরাকে বলল, তাের মেয়ে একদিন লেখাপড়ায় খুব ভ...